দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে মায়ের কোল থেকে শিশু নিয়ে এলিজা মার্ডি নামে এক ব্যক্তি উধাও হওয়ার পরে দুই দিন পর মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির অদূরে একটি জঙ্গল থেকে দেড় বছর বয়সী শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্বজনদের দাবি, এলিজা মার্ডি চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে মায়ের কোল থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পরের দিন শিশুটির পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন গ্রামবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে শিশুটিকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যান শিশুটির মা–বাবা। ওই দিন রাত আটটার দিকে এলিজা মার্ডি শিশুটিকে চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে মায়ের কোল থেকে তাকে নিয়ে যান। পরে অনেক রাত হলেও তিনি বিয়েবাড়িতে আর ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাদের কোথাও পাওয়া যায়নি। পরদিন রোববার সকাল ১০টার দিকে এলিজা মার্ডি একা বাড়ি ফেরেন এবং বিকেলে এলিজা মার্ডির চাচা শিশুটিকে জীবিত ফেরত পেতে চাইলে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ সময় মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান শিশুটির মা–বাবা।
এদিকে, সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি কৃষিকাজের জন্য মাঠে গিয়ে বিলের পাশে বাঁশঝাড় সংলগ্ন একটি শুকনা নালার মধ্যে অর্ধগলিত অবস্থায় এক শিশুর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি তিনি আশপাশের লোকজনকে জানান। এ সময় স্থানীয় লোকজনের পক্ষ থেকে ৯৯৯ নম্বরে কল দেওয়া হলে নবাবগঞ্জ থানা–পুলিশের একটি দল মরদেহটি উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে নিখোঁজ শিশুর স্বজনেরা ছুটে আসেন এবং লাশ শনাক্ত করেন। এ সময় গ্রামবাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এলিজা মার্ডি, তার চাচা, তিন প্রতিবেশী নারীসহ ছয়জনকে আটক করেন। পরে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। নিহত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।